Old Birth Registration Online

যখন ডিজিটাল জন্ম সনদ নিবন্ধনের সিস্টেম ছিলোনা তখন কিন্তু জন্ম সনদ দেয়া হত হাতে লিখে যেটা এখনও অনেকের কাছেই আছে। তবে এই জন্ম সনদ এখন কাজে লাগবেনা যদি না এটি ডিজিটাল হয় কেননা এখন প্রায় সবকিছুতেই ডিজিটাল জন্ম সনদ চাওয়া হয়। তবে চিন্তার কিছু নেই কারণ আপনি আপনার পুরনো জন্ম নিবন্ধন সনদটি অনলাইন করতে পারবেন খুব সহজেই। এজন্য অবশ্যই পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম খুব ভালো ভাবে জেনে রাখতে হবে।

পূর্বে জন্ম নিবন্ধন হাতে লেখা হত এবং জন্ম নিবন্ধন নাম্বারটি ছিলো ১৬ সংখ্যার। এই সনদ ব্যবহার করে বর্তমানে আপনি সরকারি বা বেসরকারি কোন সেবাই নিতে পারবেন না। ডিজিটাল সনদটি ১৭ ডিজিটের এবং এখন সকল ক্ষেত্রেই এটির প্রয়োজন হয়। যাইহোক, পুরাতন জন্ম সনদ ডিজিটাল করার উপায়টি সম্বন্ধে এখন আমরা বলতে যাচ্ছি। আপনার যদি একটি স্মার্টফোন অথবা কম্পিউটার এবং সাথে একটি ইন্টারনেট সংযোগ থাকে তাহলে আপনি মাত্র কয়েক মিনিট ব্যয় করেই আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন।   আশা করছি পুরো লেখাটি পড়ার পর আপনি নিজেই ঘরে বসেই এটি করতে সক্ষম হবেন।

পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার প্রয়োজনীয়তা 

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার প্রয়োজনীয়তা অনেক। শুরুতেই বলেছি যে হাতে লেখা জন্ম সনদ এখন আর কোন কাজে লাগেনা কারণ সব প্রয়োজনেই এখন দরকার হয় ডিজিটাল জন্ম সনদের। জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, শিক্ষাগত সনদ, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, চাকরি, বিয়ে নিবন্ধনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হয়। অনলাইনে থাকলে এসব কাজে সহজেই ব্যবহার করা যায়। এছাড়া বিদেশে পড়াশোনা, চাকরি, ইমিগ্রেশন বা ভিসা আবেদন করার সময় ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন থাকলে তা সহজে যাচাই করা যায় এবং গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে জন্ম সনদ ডিজিটাল করার সুবিধা কতখানি।

See also  নতুন ভোটার আবেদন করতে কি কি লাগে? আবেদন এর নিয়ম দেখুন

জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করার আবেদন করার আগে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদটি ইতিমধ্যে অনলাইনে আছে কিনা তা যাচাই করে নেয়া আবশ্যক। যদি এটি ডাবল হয়ে যায় তাহলে পরবর্তীতে একাধিক সনদ থাকার কারণে সমস্যায় পড়তে পারেন। এজন্য আপনাকে everify.bdris.gov.bd ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করতে হবে এবং নিয়ম মেনে যাচাই করে দেখতে হবে। যদি দেখেন যে অলরেডি সেটা ডিজিটাল হয়েই আছে তাহলে আর আবেদন করার প্রয়োজন নেই।

নতুন করে জন্ম নিবন্ধনের জন্য অনলাইন আবেদন করে নিন

পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার ক্ষেত্রে কি কি প্রয়োজন? 

যখন আপনি পুরাতন জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করতে আবেদন করবেন তখন আপনার কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে। আবেদন করার পূর্বেই এগুলো সংগ্রহ করে রাখুন।

  • পিএসসি, জেএসসি বা এসএসসি সার্টিফিকেট
  • বাবা মায়ের অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম সনদ
  • বাবা এবং মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র
  • স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণের জন্য কর প্রদানের প্রমাণপত্র
  • নিজ নামের জমির দলিল (যদি থাকে)
  • বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল স্বীকৃত এমবিবিএস বা তদূর্ধ্ব ডিগ্রিধারী চিকিৎসক এর দেয়া প্রত্যয়নপত্র।

আবেদনের আগে, জন্ম নিবন্ধন ফি কত টাকা ২০২৫ ? সরকারি ফি এর তালিকা দেখে নিন

পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়মঃ 

আগেই বলেছি যে জন্ম সনদ ডিজিটাল করার উপায়টি খুবই সহজ। নিচে আমরা ধাপগুলো তুলে ধরছি যাতে আপনি পর্যায়ক্রমে এগুলো অনুসরণ করে কাজটি নিজেই করে ফেলতে পারেনঃ

ধাপ ১ঃ প্রথমে আপনার স্মার্টফোন অথবা কম্পিউটার থেকে https://bdris.gov.bd/  ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করুন।

ধাপ ২ঃ ওয়েবসাইট এর হোমপেজে প্রবেশের পর আপনি মেন্যু দেখতে পাবেন, সেখান থেকে “জন্ম নিবন্ধন” অপশনটি বেছে নিতে হবে। এখানে ক্লিক করলে আপনার সামনে আরও কয়েকটি অপশন আসবে।

reprint

 

ধাপ ৩ঃ এখন “জন্ম নিবন্ধন সনদ পুনঃ মুদ্রণ” অপশনটিতে ক্লিক করুন। এখানে দুইটি বক্স দেখতে পাবেন যেখানে আপনাকে জন্ম নিবন্ধন নম্বর ও জন্ম তারিখ নির্ভুলভাবে লিখতে হবে।

See also  Birth Certificate Check Online in 2025: A Complete Guide for You

copy birth registration

ধাপ ৪ঃ এর ঠিক নিচেই “অনুসন্ধান” অপশন থাকবে, সেটিতে ক্লিক করুন।

ধাপ ৫ঃ যদি আপনার জন্ম সনদটি ইতিমধ্যেই অনলাইনে থাকে তাহলে তা নিচে শো করবে এবং এখানে আপনি বিস্তারিত দেখতে পাবেন।

ধাপ ৬ঃ যাইহোক, আপনি এখন পর্যন্ত এ সকল তথ্য দিয়েছেন তা যদি সঠিক থাকে তাহলে “নির্বাচন করুন” বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ ৭ঃ এখন আপনি স্ক্রিনে একটি পপ আপ দেখতে পাবেন যেখানে লেখা থাকবে “আপনি কি নিশ্চিত”। নিশ্চিত করতে “কনফার্ম” বাটনে ক্লিক করুন।

Birth apply Info

ধাপ ৮ঃ এরপর আপনাকে নিবন্ধন কার্যালয়ের ঠিকানা প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে দেশ, বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং অফিস ঠিকভাবে বাছাই করতে হবে।

ধাপ ৯ঃ এ পর্যায়ে যিনি আবেদন করছেন তাঁর তথ্য প্রদান করতে হবে। যদি আপনার বয়স ১৮ বছরের বেশি হয় তাহলে সম্পর্কের স্থানে “নিজ” অপশনে টিক দিতে হবে। তবে ১৮ বছরের কম হলে “পিতা” অপশনে টিক দিতে হবে।

ধাপ ১০ঃ এখন ফোন নাম্বারের সাথে আপনাকে একটি নাম্বার দিতে হবে যেটা অবশ্যই সচল রয়েছে। এরপর সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ ১১ঃ “সাবমিট” বাটনে ক্লিক করার পর আপনার আবেদন সম্পন্ন হয়ে যাবে এবং আপনার আবেদন সফল হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে একটি ম্যাসেজ পাবেন। এখানে নিবন্ধন আইডি নম্বরও থাকবে।

ধাপ ১২ঃ নিচে থাকা “আবেদনপত্র প্রিন্ট” অপশনে ক্লিক করুন তাহলে এটি ডাউনলোড হয়ে যাবে।

ধাপ ১৩ঃ আপনাকে একটি নির্ধারিত তারিখে নিবন্ধকের কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ আবেদনপত্রটি জমা দিতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন পসিবল ডুপ্লিকেট সমস্যার সমাধান ২০২৫, দেখে নিন

নতুন জন্ম সনদ কিভাবে সংগ্রহ করবেন?

জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপনার নির্বাচিত নিবন্ধক কার্যালয় থেকে সনদ সংগ্রহ করে নিতে হবে।  যারা সিটি কর্পোরেশন থেকে নিতে চান তাঁদেরকে অবশ্যই আবেদন করার ১৫ দিনের মধ্যেই সনদ সংগ্রহ করতে হবে। যদি তা না করেন তাহলে আবেদন বাতিল হয়ে যেতে পারে। আপনার ডিজিটাল জন্ম সনদটির প্রিন্ট কপি হাতে পাবার পর তাতে বর্তমানে দায়িত্বরত সচিবের স্বাক্ষর এবং সিল নিতে হবে। অথবা যিনি মেয়র আছেন তাঁর স্বাক্ষর ও সিল নিলেও হবে।

See also  নতুন ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া ২০২৫| নিবন্ধন করতে কি কি লাগে

জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে না থাকলে কি করবেন? 

সাধারণত ২০০১ সালের আগে করা জন্ম নিবন্ধনগুলো অনেকক্ষেত্রেই অনলাইনে অন্তর্ভুক্ত নেই। এছাড়া কেউ যদি জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে থাকেন কিন্তু সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনের অফিস থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন না নিয়ে থাকেন, তাহলে সেটি অনলাইনে দেখাবে না। তাছাড়া কিছু সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আবেদন অনুমোদন করতে দেরি করে, ফলে অনলাইন তথ্য হালনাগাদ হয় না।

সর্বশেষ, কেউ যদি কখনো জন্ম নিবন্ধন না করে থাকে, তবে স্বাভাবিকভাবেই সেটি অনলাইনে পাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে পুরাতন সনদ দিয়েই নতুন ডিজিটাল সনদের আবেদন করতে হবে। ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন থাকলে শিশুদের জন্মের পর থেকেই তারা সরকারি সেবার আওতায় আসে এবং নাগরিক অধিকার নিশ্চিত হয়। কাজেই বুঝতেই পারছেন এর গুরুত্ব কতখানি।

শেষ কথা

আশা করছি, আপনারা পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে পেরেছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ডিজিটাল জন্ম সনদ না হলেই নয়। এজন্য সচেতন মানুষরা তাঁদের পুরাতন সনদটি ডিজিটাল করে ফেলেছেন আগে ভাগেই। কাজেই, আপনার সনদটি যদি এখনও অনলাইন করা না থাকে তাহলে দেরি করবেন না আর কারণ কখন কি কাজে এটি লাগবে তা আপনিও জানেন না।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার আরও একটি সুবিধা আছে, এটি ডিজিটাল করার সময় যদি আপনি দেখেন যে পুরাতন সনদে কোন ভুল আছে তাহলে পরেরটাতে নির্ভুলভাবে আবেদন করতে পারবেন। আশা করা যায়, উপরের পদ্ধতিটি দেখে খুব সহজেই আপনি নিজেই জন্ম সনদ ডিজিটাল করতে আবেদন করতে সক্ষম হবেন। যদি এটি দেখার পরও কোথাও সমস্যা হয় তাহলে আমাদেরকে জানাতে ভুলবেন না।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *