জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাইঃ নাগরিক হিসেবে জন্ম নিবন্ধন যেকোনো মানুষের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিচয়পত্র হিসেবে কাজ করে এবং বর্তমানে এটি অনলাইনে থাকা আরও বেশি জরুরী। অনলাইনে থাকা একটি জন্ম নিবন্ধনের সুবিধা হচ্ছে আপনি যেকোনো সময় আপনার জন্ম নিবন্ধনের ১৭ ডিজিটের নাম্বার এবং জন্ম তারিখ ব্যবহার করে খুব সহজেই তথ্য গুলো খুজে পেতে এবং যাচাই করতে পারেন।
এ ক্ষেত্রে তথ্যে কোন ভুল আছে কিনা সেটাও আপনার নজরে আসবে। কাজেই, অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার সঠিক উপায়টি জানা অতি গুরুত্বপূর্ণ যেটা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি জানতে চলেছেন। আমরা চেষ্টা করবো জন্ম নিবন্ধন যাচাই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য গুলো এই লেখার মাধ্যমে তুলে ধরতে।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই (Birth Certificate Check Online)
জন্ম নিবন্ধন অত্যন্ত দরকারি একটি ডকুমেন্ট এবং এটি নানা ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়ে থাকে। যারা ১৮ বছরের নিচে আছেন তাদের জন্য এটি আরও বেশি গুরুত্ব বহন করে কারন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে গেলে আপনাকে এই ডকুমেন্টটিই ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া একজন নাগরিক হিসেবে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পেতে হলেও জন্ম নিবন্ধন সনদের প্রয়োজন। এটি ছাড়া ভোটার আইডি কার্ড পাওয়াও সম্ভব না। একারণেই এই সনদটির তথ্যবলী ঠিক আছে কিনা বা এটি অনলাইনে আছে কিনা তা অবশ্যই যাচাই করে দেখতে হবে।
আরেকটি অতি দরকারি বিষয়, তা হচ্ছে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার পূর্বে অবশ্যই এ ব্যাপার নিশ্চিত করুন যে আপনি সঠিক ভাবে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন এর আবেদন সম্পন্ন করেছেন। আপনি তখনই জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন যখন আপনার আবেদন সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে। শুধুমাত্র জন্ম নিবন্ধন এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়েই আবেদন পূরণ করবেন। আপনি হয়তো অনলাইনে সার্চ করার পরে অনেক ওয়েবসাইট পেতে পারেন, যার মাধ্যমে আবেদন করলে আপনার আবেদনটি সঠিকভাবে সম্পন্ন নাও হতে পারে। তাই সঠিকভাবে আবেদন সম্পন্ন করার জন্য শুধুমাত্র অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার জন্য আপনার কি কি থাকতে হবে?
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার জন্য কিছু জিনিস বা তথ্য আপনার সংগ্রহে থাকতে হবে যেটা ব্যবহার করে আপনি তথ্য গুলো অনুসন্ধান করবেন। যেমনঃ
- জন্ম নিবন্ধন নাম্বার (১৭ ডিজিটের),
- জন্ম তারিখ (অবশ্যই যেটা জন্ম নিবন্ধনে ব্যবহার করা আছে),
- একটি ইন্টারনেট সংযোগ সহ স্মার্ট ফোন অথবা কম্পিউটার।
এগুলোর সাথে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করলেই আপনি যাচাই করতে পারবেন আপনার অনলাইনে থাকা জন্ম নিবন্ধনটি।
জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার প্রয়োজনীয়তাঃ
জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার গুরুত্ব যে কতখানি সে ব্যাপারে আগেই আপনারা কিছুটা জেনেছেন। এটির প্রয়োজনীয়তা আরও ভালোভাবে বোঝানোর জন্য নিচে কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হলঃ
জন্ম সনদটি ডিজিটাল কিনাঃ আপনার জন্ম সনদটি ডিজিটাল করা আছে কিনা তা জানতে অবশ্যই আপনাকে এটি যাচাই করতে হবে কারণ বর্তমানে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ডিজিটাল জন্ম সনদ চাওয়া হয়।
জন্ম সনদটি আসল কিনাঃ আপনার জন্ম সনদটি আসল কিনা সে ব্যাপারে কি আপনি নিশ্চিত? বর্তমানে অনেকেই বিভিন্ন টুলস এর সাহায্যে অসৎ উপায়ে নকল জন্ম সনদ তৈরি করে থাকে। আপনার সনদটি আসল কিনা তা জেনে নেয়ার জন্য এটি অনলাইনে যাচাই করার কোন বিকল্প নেই।
ভোটার আইডি কার্ড তৈরিতেঃ আপনি যদি নতুন ভোটার আইডি কার্ড পেতে চান তবে আপনার নিশ্চিতভাবে জন্ম সনদ থাকতে হবে। মূলত এই সনদের তথ্যের ভিত্তিতেই আপনাকে ভোটার আইডি কার্ড প্রদান করা হবে। এজন্য ভোটার আইডি কার্ড পাওয়ার আগেই সনদটি যাচাই করে নেয়া উচিত।
কোন তথ্য ভুল আছে কিনাঃ যেহেতু জন্ম নিবন্ধন সনদ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সেহেতু এতে কোন ভুল থাকা উচিত নয়। এর তথ্য গুলো শতভাগ সঠিক আছে তা নিশ্চিত করতেই যাচাই করে নেয়া প্রয়োজন।
বিদেশ ভ্রমণেঃ বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে যখন আপনি পাসপোর্ট এবং ভিসার আবেদন করবেন তখন এই ডকুমেন্টটি আপনার প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকেনা তখন জন্ম নিবন্ধন দিয়েই পাসপোর্ট ভিসার আবেদন করতে হয়।
কিভাবে জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে যাচাই করবেন?
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই এমন কোন জটিল প্রক্রিয়া নয়, যে কেউই মাত্র কয়েকটি পদক্ষেপের সাথে ঘরে বসেই যাচাই করে নিতে পারেন তার জন্ম নিবন্ধনটি। যাইহোক, নিচে পুরো প্রক্রিয়াটি তুলে ধরছিঃ
স্টেপ ১: অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন
প্রথমে আপনাকে everify.bdris.gov.bd ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করতে হবে। আপনি চাইলে গুগল থেকে সার্চ করেও ঢুকতে পারেন। এই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেই বাংলাদেশের সকল নাগরিকদের জন্ম তথ্য সংরক্ষণ করা আছে।
স্টেপ ২: নিবন্ধন নাম্বার বসান
ওয়েবসাইটে প্রবেশের পর আপনার সামনে নিচের মত একটি পেজ প্রদর্শিত হবে যেখানে আপনাকে জন্ম নিবন্ধন নাম্বার, জন্ম তারিখ বসাতে হবে এবং ক্যাপচা সমাধান করতে হবে।
প্রথমেই আছে জন্ম নিবন্ধন নাম্বার প্রবেশের ঘর, এখানে নির্ভুলভাবে আপনাকে ১৭ ডিজিটের নাম্বারটি প্রবেশ করাতে হবে। যেহেতু নাম্বার কপি করে বসানোর অপশন নেই সেহেতু আপনাকে নাম্বারটি টাইপ করে লিখতে হবে। কাজেই, এমনভাবে লিখুন যাতে ভুল না হয়।
স্টেপ ৩: জন্ম তারিখ বসান
জন্ম নিবন্ধন নাম্বার বসানোর পর আপনাকে নির্ধারিত ঘরে জন্ম তারিখ বসাতে হবে। এ ক্ষেত্রে YYYY-MM-DD ফরম্যাট অনুযায়ী তারিখ লিখতে হবে। তারিখের ঘরে ক্লিক করার পর আপনি একটি ক্যালেন্ডার পাবেন যেখান থেকে সাল, তারিখ সিলেক্ট করে দিতে পারবেন। এছাড়া, আপনি চাইলে ফরম্যাট অনুযায়ী নিজেও লিখতে পারেন। নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুনঃ
স্টেপ ৪: ক্যাপচা সমাধান করুন
এখন ক্যাপচা সমাধান করতে হবে। এখানে সাধারনত Mathematics সংবলিত ছবি থাকে যেটা দেখে আপনাকে Mathematicsটি সমধান করে খালি ঘরে বসাতে হবে। এ ক্ষেত্রে দুটি সংখ্যার মধ্যে যোগ বা বিয়োগ থাকতে পারে। নিচের ছবিটি একটি উদাহরণ হিসেবে দেয়া, আপনার Mathematicsটি অবশ্যই ভিন্ন থাকবে।
স্টেপ ৫: তথ্য অনুসন্ধান করুন
ফরমের যাবতীয় তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করা সত্ত্বেও অন্তত একবার মিলিয়ে নিন কোথাও ভুল আছে কিনা। মনে রাখবেন, কোন তথ্য ভুলভাবে দেয়া হলে আপনার জন্ম নিবন্ধন পাওয়া যাবে না। কাজেই, সব কিছু আরেকবার যাচাই করে নিচে থাকা ‘Search’ বাটনে ক্লিক করুন। ‘Search’ বাটনে ক্লিক করার সময় লক্ষ্য রাখুন এর পাশে Clear নামে একটি বাটন রয়েছে। এখানে ক্লিক করলেই সমস্ত তথ্য গুলো মুছে যাবে। কাজেই, সতর্কতার সাথে কাজটি করুন।
স্টেপ ৬: তথ্য যাচাই করুন
যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে সার্চ বাটনে ক্লিক করার পরই আপনার সামনে নিচের ছবির মত একটি পেজ প্রদর্শিত হবে। এখানে আপনার জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য রয়েছে, এগুলো যাচাই করে দেখুন ঠিক আছে কিনা।
অনেকসময় সার্চ করার পর ‘Record not found’ আসতে পারে কারণ সম্ভবত আপনি ভুল তথ্য প্রদান করেছেন। এছাড়া যদি আপনার সনদটি ডিজিটাল না হয় অথবা নকল হয় সেখেত্রেও ‘Record not found’ লেখা আসতে পারে।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই কপি ডাউনলোড (Online Birth Certificate Download) করবেন কিভাবে?
জন্ম নিবন্ধন কপি সরাসরি ডাউনলোড করার কোন অপশন এখনও ওয়েবসাইটে দেয়া হয়নি। কাজেই, তথ্য গুলো পাওয়ার পর আপনি কোন ডাউনলোড অপশন পাবেন না। তবে এটি যে ডাউনলোড করা যাবে না বিষয়টি এমন নয়। আপনি অন্য উপায়েও ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
উপরের ৬ টি ধাপ সঠিকভাবে অনুসরন করে অথ্য খুজে পাওয়ার পর পেজটি স্ক্রিনে থাকা অবস্থায়ই keyboard থেকে CTRL+P একসাথে চাপুন। এখন আপনি Print to PDF নামক একটি অপশন পাবেন, যদি আপনার Printer থাকে তাহলে এই অপশনে ক্লিক করে আপনি কপিটি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন।
তবে প্রিন্টার না থাকলেও কপিটি ডাউনলোড করতে পারবেন। এজন্য একই পেজ থেকে Save as PDF সিলেক্ট করে নিন এবং নিচের Save বাটনে ক্লিক করলেই এটি PDF আকারে ডাউনলোড হয়ে যাবে।
মোবাইলের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন যাচাই
আপনি যদি আপনার মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন চেক করতে চান তবে আপনি খুব সহজেই তা করতে পারবেন। মোবাইলে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার জন্য উপরে উল্লেখিত অফিশিয়াল লিংকটি ওপেন করুন।
এখানে আপনি আপনার ১৭ ডিজিটের জন্ম সনদ নাম্বারটি এবং আপনার জন্ম সনদে উল্লেখিত জন্ম তারিখটি ব্যবহার করে আপনার জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন। মোবাইলের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে আমি উপরে যে ধাপগুলো সম্পর্কে আলোচনা করেছি সেগুলোই শুধু স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে অনুসরণ করুন।
জন্ম নিবন্ধন তথ্য যাচাই সম্পর্কে কিছু ভুল ধারনাঃ
জন্ম নিবন্ধন যাচাই সম্পর্কে আমাদের মধ্যে প্রায়শই কিছু ভুল ধারনা কাজ করে। এসব ভুল ধারনা গুলো থাকার কারণেই অনেকেই তাদের জন্ম সনদটি খুঁজে পেতে ব্যর্থ হন। আপনি অনলাইনে নাম দিয়ে জন্ম সনদ যাচাই করতে পারবেন না। এমনকি শুধু জন্ম তারিখ দিয়েও এটি যাচাই করা সম্ভব নয়।
অনেকেই মনে করেন যে যেকোনো একটি তথ্য দিয়েই মনে হয় অনলাইনে সনদ খুঁজে পাওয়া সম্ভব। এটি একেবারেই ভুল। নিশ্চিত হওয়ার জন্য আপনি একবার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখতে পারেন সেখানে কোন কোন তথ্য চাওয়া হয়েছে। এটি দেখলেই আপনার ধারনা পরিস্কার হবে।
১৭ ডিজিটের না হলে কি জন্ম সনদ যাচাই করা যায়?
আপনারা জানেন যে সরকার পূর্বের হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন বাতিল করেছে যেখানে ১৬ ডিজিটের নিবন্ধন নাম্বার ছিল। এখন অনেকেরই প্রশ্ন থাকতে পারে যে যাদের কাছে এই ১৬ ডিজিটের নাম্বার রয়েছে তারা কি অনলাইনে নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন? অবশ্যই পারবেন! এ ক্ষেত্রে ১৬ ডিজিটের নাম্বারটিকে ১৭ ডিজিটে রুপান্তর করতে হবে এবং তারপর যাচাই করতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন যাচাই ওয়েবসাইট এ প্রবেশের পর নির্ধারিত স্থানে নিবন্ধন নাম্বার বসানোর সময় ১৬ ডিজিটের নাম্বারের শেষের দিক থেকে ৫ নম্বর ঘরে একটি শুন্য বসিয়ে দিন। এখন আপনার নাম্বারটি ১৭ ডিজিটে পরিণত হয়েছে। এটা দিয়ে খুব সহজেই আপনি অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন।
আপনি কি নাম দিয়ে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারেন?
দুর্ভাগ্যবশত নাম দিয়ে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার কোন উপায় নেই। আপনি শুধুমাত্র জন্ম তারিখ এবং নিবন্ধন নাম্বার ব্যবহার করেই এটি যাচাই করতে পারেন। তবে একেবারেই যে নাম দিয়ে যাচাই করা সম্ভব নয় সেটা বলা যায় না। নাম দিয়ে যাচাই করার ক্ষেত্রে আপনাকে যেতে হবে ইউনিয়ন পরিষদ/সিটি কর্পোরেশন অথবা পৌরসভায়। এখানে যাওয়ার পর আপনার নাম বললে তারা অনলাইন ডাটাবেজ থেকে আপনার জন্ম নিবন্ধনটি খুজে বের করবে।
জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার জন্য কি কোন অ্যাপ আছে?
এখনও পর্যন্ত অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার কোন অফিসিয়াল অ্যাপ প্রকাশ করা হয়নি। আপনাকে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকেই এটি যাচাই করতে হবে। তবে অফিসিয়াল অ্যাপ না থাকলেও প্লে স্টোরে এমন কিছু অ্যাপ রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন।
যেহেতু ওয়েবসাইট এর মাধ্যমেই কম সময়ের মধ্যে এবং সহজে সনদ যাচাই করা যাচ্ছে সেহেতু অ্যাপ পাবলিশ করার প্রয়োজনীয়তা আপাতত নেই। তারপরও আপনি অ্যাপ এর মাধ্যমে যাচাই করতে চাইলে গুগল প্লে স্টোর থেকে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই করতে কি কোন খরচ লাগে?
একদমই না! আপনি সম্পূর্ণ ফ্রীতেই আপনার ডিজিটাল জন্ম সনদটি যাচাই করতে পারবেন। এখানে শুধু আপনাকে নির্ধারিত স্টেপগুলো অনুযায়ী এগিয়ে যেতে হবে। একটি স্মার্ট ডিভাইস, ইন্টারনেট কানেকশন, জন্ম নিবন্ধন নাম্বার এবং জন্ম তারিখ হলেই আপনি যেকোনো সময় যাচাই করে ফেলতে পারেন আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদটি।
জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করা কি গুরুত্বপূর্ণ?
অবশ্যই! বর্তমানে প্রায় সব কিছুতেই ডিজিটাল জন্ম সনদ চাওয়া হয় বিশেষ করে আপনি যখন কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চান। এছাড়া বিদেশ ভ্রমণ বা পাসপোর্ট তৈরিতেও জন্ম সনদ চাওয়া হয়। যেহেতু বাংলাদেশ সরকার হাতে লেখা জন্ম সনদ বাতিল করে দিয়েছে সেহেতু এখন যেসব জায়গায় জন্ম সনদ প্রয়োজন হয় সেখান আপনাকে ডিজিটাল সনদই ব্যবহার করতে হবে। এজন্য আপনার জন্ম নিবন্ধনটি যদি ডিজিটাল করা না থাকে তাহলে এখনই এতিকে ডিজিটাল করে নিন।
জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার সময় কেন ‘No Record Found’ দেখায়?
এটি দেখানোর নানা কারণ থাকতে পারে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে নিবন্ধন নাম্বার বা জন্ম তারিখ ভুল বসানো। যদি আপনি এই দুটোর মধ্যে একটিও ভুল প্রবেশ করান তাহলে ‘No Record Found’ দেখাবে। এছাড়া আরও একটি বড় কারণ হচ্ছে আপনার জন্ম সনদটি ডিজিটাল না থাকা। যদি এটি ডিজিটাল করা না থাকে তাহলে আপনি সঠিক তথ্য বসানোর পরও সনদটি খুঁজে পাবেন না।
আরেকটি কারণ উল্লেখ না করলেই নয়। আজকাল অনলাইনে নানা রকম কারসাজী হচ্ছে অর্থাৎ কেউ ইচ্ছা করলেই বিভিন্ন AI ব্যবহার করে একটি নকল সনদ তৈরি করে নিতে পারে। এই নকল সনদ আপনি কখনোই অনলাইনে খুঁজে পাবেন না। এগুলোই মূলত ‘No Record Found’ দেখানোর কারণ।
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন পাওয়া না গেলে করনীয় কি?
অনলাইনে যে সবসময় বা সব অবস্থাতে আপনি জন্ম নিবন্ধন খুঁজে পাবেন না সে ব্যাপারে আগেই বলেছি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যদি এটি পাওয়া না যায় সে ক্ষেত্রে কি করনীয়? আগে আপনাকে কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। ইতিমধ্যে উপরের আলোচনায় আমি কারণ গুলো উল্লেখ করেছি। যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন ঠিক থাকে এবং তারপরও তথ্য খুঁজে না পান তাহলে আপনাকে ইউনিয়ন পরিষদ/ সিটি কর্পোরেশন অথবা পৌরসভায় যোগাযোগ করতে হবে, সেখানে গিয়ে আপনি জানতে পারবেন যে আপনার জন্ম সনদটি আদৌ ডিজিটাল করা আছে কিনা। তাছাড়া অন্য কোন সমস্যা থাকলেও আপনি এই জায়গা থেকেই সহায়তা পাবেন বলে আশা করা যায়।
হারিয়ে যাওয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ কি ডাউনলোড করা যায়?
এই প্রশ্নের উত্তর দুইটি হতে পারে – প্রথমত, সনদ হারিয়ে যাওয়ার সাথে আপনি যদি নিবন্ধন নাম্বারটিও ভুলে যান তাহলে এটি আর অনলাইনে খুঁজে বের করা সম্ভব নয়। বিপরীতভাবে, যদি আপনার নিবন্ধন নাম্বার এবংঞ্জন্ম তারিখ মনে থাকে তাহলে আপনি সেগুলো ব্যবহার করে আপনার সনদটি পেতে এবং ডাউনলোড করে রাখতে পারেন। আরেকটি উপায় আছে, আপনি আপনার ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা কার্যালয়ে যোগাযোগ করেও আপনার জন্ম নিবন্ধনটি ফিরে পেতে পারেন।
শেষ কথা
আশা করা যায়, উপরের আলোচনা থেকে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই সংক্রান্ত আপনার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করা অত্যন্ত সহজ এবং একইসাথে গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিজিটাল জন্ম সনদ প্রয়োজন হয় সেহেতু আপনার জন্ম সনদটি ডিজিটাল কিনা বা এটি আসল কিনা বা এতে কোন তথ্য ভুল আছে কিনা সব যাচাই করে দেখা উচিত।
আমি নিশ্চিত যে উপরে দেখানো ধাপগুলো ঠিকঠাকভাবে অনুসরণ করলে আপনিও খুঁজে পাবেন অনলাইনে থাকা আপনার ডকুমেন্টটি। আপনি চাইলে এটি ডাউনলোড বা প্রিন্ট করেও রাখতে পারেন যেটা ইতিধ্যেই আলোচনা করা হয়েছে। এরপরও যদি আপনার কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টবক্সে জানাতে ভুলবেন না।
Good