আপনি কি চাকরি থেকে অব্যাহতি নিতে চাইছেন? তাহলে নিশ্চিতভাবেই আপনাকে একটি রিজাইন লেটার লিখতে হবে। কিন্তু এখানে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন হচ্ছে আপনি চাকরি থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন লেখার নিয়ম জানেন কিনা। যদি না জানেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে এটি জেনে নিতে হবে কারণ এই ফর্মালিটি ছাড়া আপনার অফিসিয়াল অব্যাহতি সম্পন্ন হবেনা।
অব্যাহতিপত্র লেখার পর আপনাকে এটি অফিসের HR এর নিকট জমা দিতে হবে, এরপর আপনার লেটারটি অনুমোদন পেলেই আপনি চাকরি ছাড়তে পারবেন। যাইহোক, আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা রিজাইন লেটার লেখার আপডেটেড নিয়ম তুলে ধরবো। এটি ছাড়াও আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা শেয়ার করবো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
চাকরি থেকে অব্যাহতি পত্র আসলে কি?
যখন আপনি একটি চাকরি ছেড়ে অন্য চাকরিতে জয়েন করতে চান তখন আগের চাকরিটি থেকে আপনাকে রিজাইন নিতে হবে। এই রিজাইন নেয়ার জন্য আপনাকে অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে একটি পত্র লিখতে হবে। চাকরি থেকে অব্যাহতি নেয়ার এই পত্রকেই বলে অব্যাহতি পত্র অথবা রিজাইন লেটার। এটির স্ট্রাকচার অনেকটা অন্যান্য আবেদন পত্রের মত, তবে কিছুটা পার্থক্য আছে।
এছাড়া আপনি লেটার লিখে জমা দিলেই যে সেটা এপ্রোভ হবে এমন কোন কথা নেই। এর কারণ হচ্ছে রিজাইন লেটারে কোথাও ভুল হওয়া অথবা সঠিক নিয়ম মেনে না লেখা হয়েছে। তাই, প্রক্রিয়াটি তাড়াতাড়ি সম্পন্ন করতে আপনাকে যথাযথ ফরম্যাটেই লিখতে হবে।
চাকরি থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন
চাকরি থেকে আমরা নানা কারণেই অব্যাহতি নিয়ে থাকি; হতে পারে সেটা কোন অনিবার্য কারণে অথবা হতে পারে আপনি প্রতিষ্ঠানের বর্তমান বেতন বা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। তবে যে কারণেই অব্যাহতি নিতে চান না কেন আপনাকে রিজাইন লেটার লিখতে হবে।
আপনারা যারা চাকরি হতে অব্যাহতির আবেদনপত্র লিখতে চান তাদের অবশ্যই এটি জেনে রাখা প্রয়োজন যে এই লেটারটি আপনাকে যথেষ্ট আকর্ষণীয়ভাবে লিখতে হবে। কারণ আপনি এটি কতটা নিখুঁতভাবে লিখছেন তাঁর উপর এটির তত দ্রুত অনুমোদন হওয়া নির্ভর করছে।
আপনার লেটারটি এমন হওয়া উচিত যেন এটি পড়ার পর খুব সহজেই HR admin আপনার চাকরি ছাড়ার কারণ বুঝতে পারেন এবং চাকরি ছাড়ার অনুমতি প্রদান করেন। এই আবেদনপত্রটি অন্যান্য যেকোনো সাধারণ আবেদনপত্রের মতই লিখতে হয় যদিও কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। তাই ঘাবড়ানোর কিছু নেই, শুধু সঠিক নিয়মটি জেনে রাখুন।
আরও দেখুনঃ নতুন ভোটার নিবন্ধন করতে কি কি লাগে
চাকরি থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন লেখার নিয়মঃ
এখন আপনারা সেই কাঙ্ক্ষিত অংশে পৌঁছেছেন কারণ আমরা এখানে রিজাইন লেটারের দুইটি নমুনা তুলে ধরবো। আশা করছি এই নমুনা লেটার দুইটি পড়লেই আপনারা নিজেরাই একটি অব্যাহতি পত্র লিখে ফেলতে পারবেন। রিজাইন লেটারে কখনও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অব্যাহতির কথা বলা হয় আবার কখনও অন্য কোম্পানিতে চাকরির কথা উল্লেখ করেও লেখা হয়ে থাকে। আমরা এখানে দুই ধরনের পত্রই উদাহরণ হিসেবে আপনাদের জন্য উপস্থাপন করছিঃ
নমুনা ১ঃ
তারিখ : ২১/০৯/২০২৪
বরাবর
ব্যবস্থাপক
আইটি বিভাগ
ব্রেন স্টেশন 23 লিমিটেড
ধানমন্ডি, ঢাকা
বিষয়ঃ চাকুরী থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন
মহোদয়,
সম্মান পূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, আমি আপনার ব্রেন স্টেশন 23 লিমিটেড কোম্পানীতে দীর্ঘ ৪ বছর যাবত সিনিয়র মার্কেটিং অফিসার হিসেবে কর্মরত আছি। ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার কারণে আগামী ০১/১০/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ হতে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হচ্ছে না।
অতএব, মহোদয়ের নিকট বিনীত আবেদন এই যে, উক্ত পদ থেকে আমাকে অব্যাহতি প্রদান করে বাধিত করবেন।
নিবেদক-
স্বাক্ষর
(জহ্রুল আলম)
সিনিয়র মার্কেটিং অফিসার
ব্রেন স্টেশন 23 লিমিটেড
গুলশান, ঢাকা।
নমুনা ২ঃ
তারিখঃ ২৩/০৯/২০২৪
বরাবর,
ব্যবস্থাপক
আইটি বিভাগ
সাউথটেক গ্রুপ
বনানী, ঢাকা
বিষয়: চাকরি থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন পত্র
জনাব,
যথাবিহীত সম্মানপূর্বক বিনীত নিবেন এই যে, আমি আপনার প্রতিষ্ঠানে ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখ হতে কর্মরত আছি। কিন্তু, সম্প্রতি একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড এ ম্যানেজার পদে আবেদন করার পর আমাকে উক্ত পদের জন্য নিয়োগ প্রদান করেছে ন্যাশনাল ব্যাংক। তাই, আমার বর্তমান চাকুরী থেকে অব্যাহতি প্রয়োজন।
অতএব, মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন এই যে, আমাকে আমার বর্তমান পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করে সিটি ব্যাংকে হিসাবরক্ষক পদে যোগদান করার সুযোগ দান করে বাধিত করবেন।
নিবেদক,
মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম
ম্যানেজার
সাউথটেক গ্রুপ
বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা
নমুনা ৩ঃ
তারিখ (আবেদনের তারিখ উল্লেখ করবেন)
বরাবর,
পরিচালক বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা,যার বরাবর লিখবেন
কোম্পানির নাম উল্লেখ করবেন
ঠিকানা উল্লেখ করবেন
বিষয়
জনাব,
সবিনয় নিবেদন এই যে, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী (পদের নাম লিখবেন) পদে(প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা) তে কর্মরত আছি।আমি গত (যোগদান তারিখ) উক্ত পদে যোগদান করি।বর্তমানে আমি (অব্যাহতির কারণ ও তারিখ)স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে অব্যাহতি পত্র প্রদান করছি।
অতএব জনাবের নিকট বিনীত নিবেদন এই যে,অনুগ্রহপূর্বক উক্ত তারিখ হতে আমার অব্যাহতি পত্র গ্রহণ করলে বাধিত থাকব।
নিবেদক,
আপনার নাম
আপনার পদের নাম, (আইডি নাম্বার যদি থাকে)
প্রতিষ্ঠানের নাম
সাক্ষর
নমুনা সাক্ষর
১।………
২।………
৩।………
নমুনা ৪ঃ
তারিখ – ২৩/০৪/২০২৪
বরাবর,
ব্যবস্থাপক
মানবসম্পদ বিভাগ
জাইকা কোম্পানি লিমিটেড
বনানী, ঢাকা
বিষয়: চাকরি থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন পত্র
জনাব,
যথাবিহীত সম্মানপূর্বক বিনীত নিবেন এই যে, আমি আপনার প্রতিষ্ঠানে ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখ হতে কর্মরত আছি। কিন্তু, সম্প্রতি একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সিটি ব্যাংক লিমিটেড এ হিসাবরক্ষক পদে আবেদন করার পর আমাকে উক্ত পদের জন্য নিয়োগ প্রদান করেছে সিটি ব্যাংক। তাই, আমার বর্তমান চাকুরী থেকে অব্যাহতি প্রয়োজন।
অতএব, মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন এই যে, আমাকে আমার বর্তমান পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করে সিটি ব্যাংকে হিসাবরক্ষক পদে যোগদান করার সুযোগ দান করে বাধিত করবেন।
নিবেদক,
রহিম খান
হিসাবরক্ষক
জাইকা কোম্পানি লিমিটেড
বনানী, ঢাকা
Resignation Letter Samples
8 January 2024
Jane Smith
Senior Manager
Johnson’s Furniture Store
123 Business Rd.
Business City, NY 54321
Dear Ms. Smith,
I want to notify you that I am resigning from my position as assistant manager for Johnson’s Furniture Store effective February 28, 2024
Thank you very much for the opportunity you’ve given me to learn all about store management and proper customer service. I have genuinely enjoyed my time with the company, and I believe the experience has taught me much about the furniture industry and how to manage employees effectively.
Next month, I will be taking on a position as a new retail store manager. In the meantime, I will be happy to assist with your transition to a new assistant manager.
Sincerely,
Signature
Joseph Hunter
Anytown, CA 12345
555-212-1234
চাকরি থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন লেখার ক্ষেত্রে কি কি বিষয় মনে রাখা উচিত?
রিজাইন লেটার লেখার ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু কমন জিনিস অবশ্যই মনে রাখতে হবে। আমরা আগেই বলেছি যে রিজাইন লেটারটির দ্রুততম সময়ের মধ্যে অনুমোদন পাওয়া নির্ভর করে আপনি কতটা পারফেক্টলি এটা লিখছেন তাঁর উপর। নিচে কিছু অতি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্ট তুলে ধরছি যেগুলো আপনার কাজে লাগবেঃ
১। রিজাইন লেটার যে ভাষাতেই লেখেন না কেন এটি এমনভাবে শুরু করা উচিত যাতে HR এটি পুরোটা পড়তে আগ্রহী হন। অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন যে আপনাকে খুব সুন্দর এবং সাবলীল ভাবেই শুরু করতে হবে।
২। চাকরি থেকে কেন অব্যাহতি নিতে চাইছেন সেটা পরিষ্কার ভাবে উল্লেখ করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে আপনার প্রতি ঊর্ধ্বতনদের নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করলে আপনার প্রফেশনালিজমও বজায় থাকে।
৩। প্রয়োজনীয় শব্দ বা বাক্য ব্যবহার করবেন না। মনে রাখবেন চাকরির শেষ দিন পর্যন্ত প্রফেশনালিজম বা পেশাদারিত্ব বজায় রাখাই একজন প্রকৃত পেশাদার মানুষের পরিচয় বহন করে। তাই যা খুশি তাই লেখা থেকে বিরত থাকুন।
৪। লেটার লেখা শেষ হবার পরই সাবমিট করবেন না, কয়েকবার রিভিশন দিয়ে কোথাও কোন ভুল নেই তা নিশ্চিত হয়েই HR এর নিকট পত্রটি জমা দিন।
৫। রিভিশন দেয়ার সময় কোথাও কোন ভুল খুঁজে পেলে সেখানে কাটাকাটি করে লেখা পরিবর্তন করবেন না, বরং নির্ভুলভাবে আরেকটি লেটার লিখুন।
শেষ কথা
আমাদের এই চাকরি থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন লেখার নিয়ম সম্পর্কিত লেখাটি নিশ্চিতভাবে আপনার জন্য যথেষ্ট সহায়ক হবে যদি আপনি চাকরি থেকে অব্যাহতি নিতে চান। আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন যে রিজাইন লেটার লেখা কঠিন কিছু নয়, শুধু নিয়ম আর গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা মনে রাখলেই যথেষ্ট। তারপরও যদি আপনার আরও কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের জানাতে দ্বিধা করবেন না।