katar company visa

আপনি কি কাতার যাওয়ার কথা ভাবছেন? তাহলে অবশ্যই কাতার কোম্পানি ভিসা বেতন কত টাকা জেনে নিন। কাতার হচ্ছে পারস্য উপসাগরের অর্থনৈতিকভাবে বেশ উন্নয়নশীল একটি দেশ। যেহেতু এটি একটি উন্নয়নশীল দেশ সেহেতু পৃথিবীর বিভিন্ন নাগরিকদের জন্য দেশটি প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এর অন্যথা নয়।

এটি অনেকেরই জানা যে প্রতি বছর আমাদের দেশ থেকে অনেকেই কাতারে যান কাজের জন্য। কাতারের অন্যান্য তুলনায় কোম্পানির চাকরি গুলোতে ভালো বেতনের পাশাপাশি আরও অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যাইহোক, আমরা আপনাকে শুধু এইটুকু তথ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাইনা। এই আর্টিকেল থেকে আপনি একটি বিস্তারিত ধারণা পেতে চলেছেন।

কাতার কোম্পানি ভিসা বেতন কত টাকা? (Qatar Company Visa Salary)

মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে কাতার অন্যতম। আপনারা যারা কোম্পানি ভিসায় কাতার যাবেন তারা মাসিক কত টাকা বেতন পেতে পারেন তার একটা ধারণা থাকা আবশ্যক। এক্ষেত্রে মাসিক বেতন ১০০০ রিয়েল থেকে ২০০০ রিয়েল পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া আপনি যদি কোম্পানি ভিসায় ড্রাইভিং পেশায় থাকেন তাহলে আপনার বেতন আরও বেশি হবে।

এখানে আপনার বেতন ২০০০ রিয়েল থেকে ৪০০০ রিয়েল পর্যন্ত হবে। আপনার যদি অভিজ্ঞতা থাকে এবং দক্ষতা থাকে তাহলে অনভিজ্ঞদের তুলনায় আপনার বেতন স্বাভাবিকভাবেই বেশি হবে। তবে আপনার বেতন কত হবে তা অনেকটা নির্ভর করে আপনার কাজের দক্ষতা এবং ধরণের উপর।

কাতার কোম্পানি ভিসা পেতে হলে আপনাকে কি করতে হবে?

কাতার কোম্পানি ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই আপনাকে কিছু নিয়মের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এজন্য প্রথমেই আপনাকে ঐ দেশ থেকে চাকরির একটি অফার পেতে হবে। এটি হতে পারে কোন ব্যক্তির মাধ্যমে বা নিজে খুঁজে। এছাড়া আপনি BMET অ্যাপ থেকে কাতারের চাকরির অফার গুলো দেখেও আবেদন করতে পারেন।

কোন কোম্পানি যদি আপনার আবেদনের প্রেক্ষিতে আপনাকে নিয়োগপত্র পেয়ে থাকেন তাহলে এই নিয়োগপত্র দিয়েই আপনাকে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। এরপর অবশ্যই আপনাকে দরকারি কাগজপত্র সমূহ সংগ্রহ করতে হবে যেগুলো আবেদনের সময় প্রয়োজন হবে। কোম্পানি থেকে আপনি যে নিয়োগপত্র পাবেন সেটি এবং অন্যান্য সব দরকারি কাগজপত্র গুলো নিয়ে কাতার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করবেন।

আবেদন করার সময় অবশ্যই আপনাকে নির্ধারিত ফী প্রদান করতে হবে। আবেদন ফী ছাড়াও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ফী থাকতে পারে যেটা আপনাকে পরিশোধ করতে হবে। এরপর আপনার সাক্ষাৎকার নেয়া হতে পারে ভিসা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক। এসময় আপনার কাছে বায়োমেট্রিক তথ্য জানতে চাওয়া হতে পারে এবং তখনই আপনাকে সেগুলো প্রদান করতে হবে।

বায়োমেট্রিক দেয়ার পর আপনার আবেদনপত্র যাচাই বাছাই করা হবে এবং যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে আপনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আপনার ভিসা পেয়ে যাবেন।

আরও দেখুনঃ কসোভো কাজের ভিসা, বেতন কত এবং কোন কাজের চাহিদা বেশি?

কাতার কোম্পানি ভিসার জন্য কি কি প্রয়োজন?

কাতার কোম্পানি ভিসার জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু দরকারি ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে। যদিও আলাদা আলাদা কোম্পানির ক্ষেত্রে ভিন্ন ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে তারপরও যেই কাগজগুলো প্রাথমিকভাবেই আপনার দরকার হবে সেগুলো নিম্নরুপঃ

১। কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদি একটি বৈধ পাসপোর্ট।

২। সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। 

৩। যে কোম্পানি আপনাকে নিয়োগ দিবে সেই কোম্পানির ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি।

৪। ইমিগ্রেশন কার্ডের ফটোকপি।

৫। আবেদনকারীর মেডিক্যাল রিপোর্ট। 

আগেই বলেছি এই কাগজ গুলো প্রাথমিক ভাবে লাগবে। এছাড়াও আরও কিছু পেপারস আছে যেগুলো প্রয়োজন হবে।

৬। নিয়কর্তা কতৃক অভিবাসন কার্ড

৭। শ্রম মন্ত্রানালয় কতৃক একটি আবেদনপত্র (সঠিক ভাবে পূরণকৃত)

৮। মেডিক্যাল সার্টিফিকেট

৯। কর্মসংস্থান চুক্তি

১০। একাডেমিক সার্টিফিকেট

১১। পাসপোর্টের ফটোকপি

১২। দুটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি

১৩। কর্মসংস্থান ভিসা

১৪। বায়োমেট্রিক তথ্য সহ আঙ্গুলের ছাপ। 

কাতার কোম্পানি ভিসায় যাওয়ার ক্ষেত্রে কোন বয়সের সীমাবদ্ধতা আছে কি?

কাতার ছাড়াও অন্যান্য দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে বয়সের গ্রহণযোগ্যতার একটি আন্তর্জাতিক নিয়ম রয়েছে। এক্ষেত্রে ২০ বছরের নিচে কেউ কাতারে যেতে পারবেন না। এই দেশে কাজের ভিসায় যেতে হলে আপনাকে অবশ্যই ২০ বছর বা তার থেকে বেশি বয়সী হতে হবে।

জেনে নিনঃ ফিনল্যান্ড কাজের ভিসা (আবেদন, বেতন, খরচ)

কাতার কোম্পানি ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে?

যেহেতু বর্তমানে বিমানের জালানি খরচ আগের তুলনায় বেড়েছে এবং একইসাথে অন্যান্য প্রক্রিয়ারও খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে সেহেতু কাতার ভিসার খরচও বেড়েছে। বর্তমানে কাতারের ভিসা পেতে আপনাকে ৫ থেকে ৭ টাকা দিতে হবে। এছাড়া বিমানের ভাড়া ৩০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। একইসাথে দরকারি কাগজপত্র তৈরি করতে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। সুতরাং ধরেই রাখতে পারেন যে কাতারে কোম্পানি ভিসায় যেতে হলে আপনাকে ৮-১০ লাখ টাকার একটি বাজেট রাখতে হবে।

শেষ কথা

কাতারে যাওয়ার ইচ্ছা কমবেশি অনেকেরই আছে যেহেতু দেশটিতে কাজের বেশ সুযোগ রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন কোম্পানির অধীনে এখনও পর্যন্ত প্রচুর বাংলাদেশি কর্মরত আছেন। বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের জন্য কাতার অনেকটা উপযোগী দেশ। তাই এখানে যাওয়ার পূর্বে আপনাকে সঠিকভাবে ভিসা করতে হবে। ইতিমধ্যেই আমরা কাতার কোম্পানি ভিসা বেতন কত টাকা সে সম্পর্কে আলোচনা করেছি। এছাড়া এর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য বিসয়ও তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করা যায় আপনারা আপনাদের প্রশ্নের উত্তরগুলো পেয়ে গেছেন। আর কোন প্রশ্ন থাকলে জানাতে পারেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *