আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট

আপনি যদি বিদেশ যাওয়ার জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে তিন দিন বা সাত দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকেন, অথবা ৩ মাস, ৬ মাস বা ৮ মাসের প্রশিক্ষণ শেষে আর.পি.এল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও যদি আপনার সার্টিফিকেট হাতে না পেয়ে থাকেন, তবে কীভাবে সেটি যাচাই করবেন, সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে আজকের পোস্টে।

বিশেষ করে, ‘আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট অনলাইন চেক’ করার পদ্ধতিটি ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে কীভাবে করা যাবে, সেই সম্পর্কে আজকের লেখায় বিস্তারিত তথ্য থাকবে। তবে, তার আগে সংক্ষেপে আমরা জেনে নেব আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট আসলে কী। তাই, সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট কি

প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট বলতে সাধারণত বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশে কাজের জন্য ইচ্ছুক কর্মীদের প্রদত্ত একটি প্রশিক্ষণ সনদপত্রকে বোঝানো হয়। একে সহজ ভাষায় ‘প্রবাসী কর্মীদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ সনদ’ বলা যেতে পারে।

সহজ কথায়, এই সার্টিফিকেটটি হলো একটি প্রমাণপত্র, যা নিশ্চিত করে যে বিদেশে কাজ করতে যাওয়ার আগে একজন ব্যক্তি তার নির্দিষ্ট কাজের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও জ্ঞান সফলভাবে অর্জন করেছেন।

আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট অনলাইন চেক

আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন, যারা আমি প্রবাসী সার্টিফিকেট চেক করার নিয়ম সম্পর্কে অবগত নন অথবা সঠিকভাবে চেক করতে পারেন না। তাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে, শুরুতেই আমরা আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট চেক করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

See also  ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে আয়: কৌশল ও পরামর্শ

আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেটটি চেক করার জন্য প্রথমে আপনার স্মার্টফোন থেকে যেকোনো একটি ব্রাউজার চালু করুন। এরপর, ব্রাউজারের সার্চ বারে ‘আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট চেক’ লিখে সার্চ করুন।

তাহলে নিচের দিকে একটু স্ক্রল করলে ‘ডাউনলোড পিডিও সার্টিফিকেট’ নামক একটি ওয়েবসাইট দেখতে পাবেন সেখানে প্রবেশ করুন।অথবা, আপনি এখানে ক্লিক করে সরাসরি নির্দিষ্ট পেইজে চলে আসতে পারেন।

ami probashi training certificate

ওয়েবসাইটটিতে আসার পর একটু স্ক্রল করলে “এক ক্লিকে প্রয়োজনীয় সেবা” এর নিচে কতগুলো অপশন দেখতে পাবেন।

ami probashi training certificate Online

সেখান থেকে ‘কার্ড ও সার্টিফিকেট’ অপশনে ক্লিক করুন। সেখান থেকে আপনাকে নিচে দিকে স্ক্রল করে “পিডিও” অপশন থেকে “পিডিও সার্টিফিকেট ডাউনলোড করুন” অপশনে ক্লিক করুন।

আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট অনলাইন চেক

তাহলে আপনার সামনে নতুন আরেকটি পেইজ চলে আসবে। সেখানে আপনার পাসপোর্ট নাম্বার ও ক্যাপচাটি পূরণ করে ‘Search’ অপশনে ক্লিক করুন।

আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট অনলাইন

তাহলে আপনাকে পিডিও সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার জন্য ১০০ টাকা পে করতে বলা হবে। তারমানে আপনার আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেটটি সম্পূর্ণ রেডি।

এখন আপনি চাইলে ১০০ টাকা পেমেন্ট করে আপনার আমি প্রবাসী সার্টিফিকেট ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। এভাবে আপনি চাইলে খুব সহজে আপনার আমি প্রবাসী সার্টিফিকেট চেক ও ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। আশা করি, এতক্ষণের আলোচনা থেকে আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে, কীভাবে আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে খুব সহজে আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেটটি চেক করা যায়।

আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট চেক করতে কি কি লাগে

প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট ডাউনলোড অথবা চেক করার জন্য আপনাকে অবশ্যই আমি প্রবাসী অ্যাপটি ব্যবহার করতে হবে। আপনি যদি অ্যাপটি খোলার পর রেজিস্ট্রেশন না করেন, তবে সেই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট ডাউনলোড বা চেক করতে পারবেন না।

এই কারণে, ‘আমি প্রবাসী‘ অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য বেশ কিছু ডকুমেন্টসের প্রয়োজন হয়। এই অংশে আমরা জানবো কী কী ডকুমেন্টস থাকলে আপনি রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।

See also  বাচ্চাদের পড়ালেখায় আগ্রহ তৈরির উপায়: কার্যকরী টিপস

আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট অনলাইনে চেক বা ডাউনলোডের জন্য কী কী ডকুমেন্টস লাগে, সেগুলোর নাম নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

  • ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  • ১ কপি ভিসার ফটোকপি সাদা কালো অথবা রঙিন।
  • পরিবারের যেকোনো একজনের ব্যাংক একাউন্ট প্রমান পত্র।
  • নিজের ব্যাংক একাউন্টের প্রমাণপত্র।
  • বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন এর ১ কপি ফটোকপি।

আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট কেন জরুরি?

এই সার্টিফিকেটটি একজন কর্মীর জন্য কয়েকটি কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ:

  • দক্ষতার প্রমাণ: সার্টিফিকেটটি প্রমাণ করে যে আপনার নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা আছে। ফলে নিয়োগকর্তা আপনার উপর আস্থা রাখতে পারেন এবং আপনিও বিদেশে গিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করতে পারেন।
  • আইনি বাধ্যবাধকতা: অনেক দেশ এবং নিয়োগকর্তা এখন প্রশিক্ষণ সনদ ছাড়া কর্মী নিতে চান না। কিছু ক্ষেত্রে, বিএমইটি স্মার্ট কার্ড পাওয়ার জন্যও এই প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক।
  • উন্নত কাজের সুযোগ: দক্ষ কর্মীদের জন্য সাধারণত অদক্ষ কর্মীদের চেয়ে ভালো বেতনের এবং উন্নত কাজের সুযোগ থাকে। এই সার্টিফিকেট আপনাকে সেই সুযোগ এনে দিতে সাহায্য করে।
  • ঝুঁকি হ্রাস: কাজ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা ও নিরাপত্তা জ্ঞান থাকায়, বিদেশে গিয়ে আপনার দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে আসে।

এক কথায় এটি শুধুমাত্র একটি কাগজ নয়, এটি আপনার দক্ষতার প্রমাণ এবং বিদেশে ভালো কাজ পাওয়ার চাবিকাঠি, যা আপনার প্রবাস জীবনকে আরও নিরাপদ ও ফলপ্রসূ করতে সাহায্য করে।সাধারণ

সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)

প্রশ্ন: যদি সার্টিফিকেট অনলাইনে না দেখায়, তাহলে কী করতে হবে?

উত্তর: প্রথমে নম্বরটি সঠিকভাবে দিয়েছেন কিনা দেখুন। যদি তাও না আসে, তাহলে আপনার ট্রেনিং সেন্টার বা BMET অফিসে যোগাযোগ করুন ওরা ডাটাবেস আপডেট করে দেবে।

See also  বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার উপায়: সহজ ও কার্যকর টিপস

প্রশ্ন: আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট অনলাইন চেক করতে ফি লাগে কি?

উত্তর: না, BMET ওয়েবসাইটে সার্টিফিকেট যাচাই সম্পূর্ণ ফ্রি। কোনো প্রকার চার্জ দিতে হয় না।

প্রশ্ন: প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট কতদিন বৈধ থাকে?

উত্তর: সাধারণত আজীবন বৈধ, তবে কিছু নির্দিষ্ট কাজ বা দেশের জন্য পুনঃট্রেনিং লাগতে পারে যেমন ড্রাইভিং, সেফটি, ইলেকট্রিশিয়ান ইত্যাদি ক্ষেত্রে।

প্রশ্ন: সার্টিফিকেট চেক করার জন্য কী কী তথ্য প্রয়োজন?

উত্তর: সাধারণত, আপনার সার্টিফিকেট নম্বর (Certificate No.), পাসপোর্ট নম্বর অথবা আপনার বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রয়োজন হতে পারে।

প্রশ্ন: অনলাইন চেকের মাধ্যমে আমি সার্টিফিকেটে কী কী তথ্য দেখতে পাব?

উত্তর: আপনি সাধারণত আপনার নাম, পিতার নাম, পাসপোর্ট নম্বর, প্রশিক্ষণের কোর্স ও মেয়াদ, এবং সনদ প্রদানের তারিখ দেখতে পাবেন।

প্রশ্ন: অনলাইন সিস্টেমে যদি আমার ব্যক্তিগত তথ্যে ভুল থাকে, তাহলে সংশোধনের উপায় কী?

উত্তর: তথ্যের ভুল থাকলে আপনাকে দ্রুত সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বা বিএমইটি/জনশক্তি অফিসে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ আবেদন করতে হবে।

প্রশ্ন: নতুন কর্মী হিসেবে ট্রেনিং শেষে সনদ পেতে কতদিন সময় লাগে?

উত্তর: প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর এবং সমস্ত দাপ্তরিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে, সনদ প্রদানের সময়সীমা প্রতিষ্ঠানভেদে ভিন্ন হতে পারে। তবে দ্রুততম সময়ে এটি নিশ্চিত করা হয়।

লেখকের শেষ কথা

আপনি যদি যেকোনো দেশে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য ভিসা হাতে পেয়ে থাকেন, তবে আপনাকে অবশ্যই প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে। এই সার্টিফিকেট পেতে হলে আপনাকে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে এবং তিন দিনের বাধ্যতামূলক কোর্সটি সম্পন্ন করতে হবে। কোর্স শেষে পরীক্ষায় পাশ করলেই আপনি আপনার প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেটটি হাতে পাবেন।

এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানিয়েছি যে, কীভাবে আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট অনলাইনে চেক করা যায়। আশা করি, আপনি পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। এরকম বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত ভিজিট করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *